Thursday, 27 October 2016

ক্ষমার এ কি দৃষ্টান্ত ! What a example of forgiveness!

 অপূর্ব প্রতিশোধ
লিখেছেন কালিদাস রায়


"পুত্র, তোমার হত্যাকারীরে পাইনিক আজো ঢুঁড়ে -
আফসোস্ তাই জ্বলিছে সদাই তামাম কলিজা জুড়ে।
তার তাজা খুনে ওজু করে আজো নামাজ পড়িনি তাই
আত্মা তোমার ঘুরিছে ধরায়, স্বর্গে পায়নি ঠাঁই।
বাঁচিয়া থাকার কথা নয় আর তোমারে হারায়ে, বাপ,
কেবল তোমার মুক্তির লাগি সই দুনিয়ার তাপ।"

বলিতে বলিতে রুমালে অশ্রু মুছিলেন ইউসুফ,
হেনকালে এক ঘটনা ঘটিল অদ্ভুত, অপরূপ।

শশকের মত ত্রস্ত-ব্যস্ত পলাতক এক ছুটে
থরথর ভয়ে কাঁপিতে কাঁপিতে চরণে পড়িল লুটে,
কহিল, - "জনাব রক্ষা করুন দুশমন পিছে ধায়।
দিন দয়া ক'রে আপনার ঘরে আশ্রয় অভাগায়।"
ইউসুফ ক'ন - "আল্লাহর ঘর মোর ঘর কেন কহ?
অজানা অতিথি, নির্ভয়ে তুমি তাঁর ঈদগাতে রহ।"

বহুদিন পরে ঘুমাল অতিথি মখমলী বিছিানায়,
হেন দামী খানা বহুকাল তার জুটেনিক রসনায়।

সুখ সুপ্তরে জাগাইয়া ক'ন শেষরাতে ইউসুফ -
"অজানা অতিথি, পালাও এবার দুনিয়া এখনো চুপ।
লও টাকাকড়ি, দুদিনের খানা আর লও তরবারি,
আশখানা হ'তে ঘোড়া বেছে নিয়ে চলে যাও তাড়াতাড়ি।

নড়িতে চাহে না মুসাফির বলে, - "বাঁচিতে চাই না আর
জীবন আমার সঁপিলাম, পীর, পুত পদে আপনার।
ইব্রাহিমের গুপ্তঘাতক আমি ছাড়া কেউ নয়,
ঐ অসিখানা এ বুকে হানুন সত্যের হোক জয়।"

বৃদ্ধের আঁখি বজ্রের মত সহসা উঠিল জ্বলি'
বজ্রদীর্ণ মেঘের মতনই অশ্রুতে গেল গলি।

কহিল বৃদ্ধ - "এতদিনে এলি, এতকাল খুঁজিলাম,
নিজে এসে হাতে ধরা দিলি আজ! ঘাতক, কি তোর নাম?
থাক- নামে আর কি কাজ আমার- মাফ করিলাম, তোরে,
সব-সেরা ঘোড়া দিলাম, এখনি পালা তার পিঠে চ'ড়ে।
পাঁচগুণ টাকা নিয়ে যা সঙ্গে চ'লে যা সুদূর দেশে,
মানুষের মন বড় দুর্বল, কাজ কি এদিকে এসে।"

তারপর চেয়ে আসমান পানে বৃদ্ধ কহিল - "বাপ
শত্রুরে তোর তলোয়ার তলে পেয়েও করিনু মাফ।
এতদিন পরে তোর হত্যার লইলাম প্রতিশোধ,
খুনের নেশায় আর করিব না আখেরের পথরোধ।"
click here to read more

No comments:

Post a Comment